এক গ্রামে থাকত একটি ছোট্ট মেয়ে। তাঁর নাম ছিল বুলবুলি৷ আসলে তাঁদের বাড়িতে ভোরবেলায় অনেক পাখি খাবার খেতে আসত। এদের মধ্যে অনেকগুলো বুলবুলি পাখিও ছিল। মা ডাকলেই তারা মায়ের কাছে ছুটে চলে আসত। মা তাই ভালোবেসে মেয়ের নাম রেখেছিলেন বুলবুলি। তো বুলবুলি বড় হয়ে উঠছিল সেই পাখিদের সঙ্গে।
গ্রামের কাছেই ছিল বেশ বড় একটা জঙ্গল। একদিন বুলবুলির মা ও দিদি বুলবুলিকে সঙ্গে নিয়ে সেই জঙ্গলে কিছু ফলমূল আর গাছপাতার খোঁজ করতে গেল। বেশ কিছু গাছপাতা জোগাড় হলে তারা ক্লান্ত হয়ে একসময় সেখানে একটি গাছের নীচে বিশ্রাম করতে বসল। এইসময় হঠাৎ তারা দেখল, একটা বিরাট পাখি ডানা মেলে খুব দ্রুত উড়ে যাচ্ছে। রামধনুর মতো তার গায়ের রঙ! এত সুন্দর, অজানা একটা পাখি দেখে তাঁরা কি আর স্থির থাকতে পারে? তাই তাঁরা তাড়াতাড়ি সেই পাখিটার পেছন পেছন ছুটতে লাগল৷ তারপর যেই পাখিটা ক্লান্ত হয়ে একটা গাছের ডালে বসেছে, অমনি সবাই মিলে চুপিচুপি গিয়ে সেই পাখিটাকে ধরে ফেলল৷ কিন্তু পাখিটা তো মহা শক্তিশালী! তাই সে সব্বাইকে একসঙ্গে তার পাখায় আটকে আকাশপথে উড়িয়ে নিয়ে চলল। ভয়ে আর উত্তেজনায় বাকিরা হতবাক হয়ে সেটা বুঝতেই পারল না!
বেশ খানিকক্ষণ ওড়ার পর পাখিটা তাঁদের একটা পাহাড়ের গুহায় নিয়ে গেল। বুলবুলির মা, দিদিরা অবাক হয়ে দেখল, সেখানে ঝলমল করছে অন্য একটা পৃথিবী৷ সেই পৃথিবীটা পাখিটার মতোই নানা রঙ দিয়ে তৈরি। ছোট্ট বুলবুলিও এসব দেখে ভারি মজা পেল। এ যেন এক স্বপ্নের রাজ্য! তাঁরা আরও অবাক হয়ে দেখল যে সকালবেলায় মায়ের কাছে খাবার খেতে আসা পাখিরাও রয়েছে সেই রাজ্যে। এসব দেখে বুলবুলিদের ভারি আনন্দ হল। তাঁরা আর নিজেদের বাড়ি না ফিরে সেখানেই থাকতে লাগল। এভাবেই তাঁদের অন্য একটা নতুন, রঙিন বাড়ি হল।
দেবদত্তা সরকার